ব্লগ সংরক্ষাণাগার

বুধবার, ৫ জুলাই, ২০২৩

ছুপা/গোপন শিয়ার অপকৌশল


-এডমিন।

আজ অনলাইনে সক্রিয় আরেক সন্দেহভাজন সম্পর্কে আলোচনা করবো। সত্য তেতো, কিন্তু জ্ঞানের খাতিরে বলতে হয়। আমি যখন ২০১৯ সালের শেষভাগে ফেইসবুকে ‘সুন্নী দৃষ্টিকোণ হতে গাদীরে খুম-সম্পর্কিত হাদীসের বিশ্লেষণ’ শীর্ষক বইটি ধারাবাহিক পোষ্টে প্রকাশ আরম্ভ করি, তখন এই আজহারী মৌ-লোভী ও তাঁর সহযোগীরা আমার একটি প্রকাশিত শিয়া-বিরোধী বইয়ের বিরুদ্ধে স্ক্রীনশট ধোঁকাবাজিতে লিপ্ত হন। এই মৌ-লোভী আমার মেসেঞ্জার বক্সে এসে আমীরে মু’য়াবিয়া (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু)-এর ব্যাপারে কাফফে লিসান তথা নিশ্চুপ/সুকুত থাকতে বলেন (নোট: আমীরে মুয়াবিয়া রা.-এর পক্ষে জবাব বইটির অনুবাদ তখন আরম্ভ হয়েছিলো)। বস্তুতঃ নিচের (২য়) স্ক্রীনশটেও ওই সাহাবী (রা.) সম্পর্কে তাঁর এলার্জি দৃশ্যমান। অথচ কাফফে লিসান শুধু সাহাবা (রা.)-বৃন্দের মধ্যকার মতভেদের ক্ষেত্রেই প্রয়োগযোগ্য; তাঁদের ফযীলত বর্ণনার ক্ষেত্রে নয়। এ ব্যাপারে জানতে উপাধ্যক্ষ মওলানা এ,কে,এম, ফজলুল হক সাহেবের এতদসংক্রান্ত আলোচনার সিরিজ ভিডিওগুলো দেখার বিনীত অনুরোধ জানাই।
নিচের ২য় স্ক্রীনশটে মৌ-লোভী আজহারী দাবি করেছেন কোনো সুন্নী ইমাম বিগত ইসলামী ইতিহাসে আমীরে মু’য়াবিয়া (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু)-এর শান-মান প্রকাশক অনুষ্ঠান করেননি। অথচ হাদীসের ইমামবৃন্দ (রহ.) তাঁর ফযীলত বর্ণনায় নিজেদের হাদীসগ্রন্থে আলাদা আলাদা অধ্যায় রচনা করেছেন। এটাই তো (শরঈ) ফাউন্ডেশন তথা ভিত্তি রচনা করেছে। ধর্মীয় বইয়ে প্রশংসা করতে পারলে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কেন নয়? কেন এই এলার্জি? এটা শিয়ার আলামত নয় কি?
আজহারী মৌ-লোভী ওই শিয়া আলামত ছুপাবার তথা লুকোবার অসৎ উদ্দেশ্যে ঈদে গাদীর শব্দের মধ্যে ঈদ শব্দটি বাদ দিতে চান। এটা স্রেফ তাকিয়াবাজি বা ধোঁকাবাজি! সুন্নী মুসলমান সমাজকে ধাপ্পা দেয়ার শয়তানী ফন্দি! আমি ইতিপূর্বে একটি পোষ্টে বলেছিলাম, অনলাইনে অচেনা কারো কথায় বিশ্বাস করবেন না। সুন্নী আলেম-উলামা যাঁদেরকে ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে বিশ্বস্ত বলে চেনেন-জানেন, শুধু তাঁদের ধর্মীয় পরামর্শই গ্রহণ করবেন। কেননা আজকাল মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে এজেন্ডাধারী সেবাদাস অনেক মৌ-লোভীর আবির্ভাব ঘটছে। এরা ইরানী অথবা সৌদি উটের দুধ ও দুম্বার গোস্তের (মানে পেট্রো-ডলারের) কারবারি; শিয়া মোত’আ ললনাদের সরবরাহকারী! অতএব, সাবধান! এসব ঈমান হরণকারী বদমাইশ লোকের চক্রান্তের জালে আটকা পড়বেন না।
শিয়া ঈদে গাদীর নিয়ে যেহেতু অনেক লেখালেখি চলছে, সেহেতু এ বিষয়ে এখানে আর লিখলাম না। আমার এতদসংক্রান্ত পোষ্টগুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখুন। ধন্যবাদ।


*সমাপ্ত*

‘আহলে বাইত (রা.) ও আসহাব (রা.)-বৃন্দের প্রতি ভক্তিতে মুক্তি’ শীর্ষক বই

 

-এডমিন

শিরোনামে উল্লেখিত বইটি নিয়ে অনলাইনে সক্রিয় শিয়াচক্র ২০১৯ সাল থেকে হৈচৈ করছে। বইটির অনুবাদক আমি অধম হলেও প্রকাশক সাঞ্জেরী পাবলিকেশনের মওলানা মুহাম্মদ আবূ তৈয়ব চৌধুরী। এতে সম্পাদনা করেন মওলানা এ,এ, জামেউল আখতার চৌধুরী ও সাঞ্জেরী পাবলিকেশনের সুযোগ্য সম্পাদক প্যানেলের আলেম-উলামা। বইটি প্রকাশ হয় চট্টগ্রাম থেকে ২০১৭ সালের শেষভাগে।
শিয়াচক্র ফেইসবুকে স্ক্রীনশট ধোঁকাবাজি দ্বারা এ বইয়ের বিরুদ্ধে আহলে বাইত (রা.)-এর প্রতি বিদ্বেষ প্রকাশের অভিযোগ উত্থাপন করেছে। অথচ এতে কেবল ইতিহাসের রেফারেন্স-ই পেশ করা হয়েছিলো। বস্তুতঃ এগুলো কোনো ফতোয়া ছিলো না; শিয়া ও দেওবন্দীদের ইতিহাস বই হতে রেফারেন্স ছিলো যা নিয়ে শিয়াচক্র হৈচৈ বাধিয়েছে।
সাঞ্জেরী পাবলিকেশনের সম্পাদনা পর্ষদের প্রধান মওলানা এ,এ, জামেউল আখতার চৌধুরী শিয়া গোষ্ঠীর অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে তাঁর ফেইসবুক আইডি হতে আরেকজনের মন্তব্য সেকশনে নিজের দায় এড়িয়ে বইটির সম্পাদনা দেখেননি বলে মন্তব্য করেন। অথচ তাঁর নাম বইটিতে সম্পাদক হিসেবে শোভা পাচ্ছে।
অতএব, এ অভিযোগের জবাবে আমার বক্তব্য হলো, প্রকাশক আবূ তৈয়ব চৌধুরী ও তাঁর সম্পাদনা পর্ষদ দীর্ঘদিন যাবৎ এ কাজে জড়িত ছিলেন। তাঁরা সবাই জবরদস্ত সুন্নী আলেম। আমি বইটি অনুবাদ করে চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম আর তাঁরা এটাকে সম্পাদনা করেছিলেন। আমি বইটিকে চূড়ান্ত রূপদানের দায়িত্ব তাঁদের কাঁধেই ন্যস্ত করেছিলাম। অতঃপর কেউ শত্রুদের অনৈতিক চাপে পড়ে নিজ দায়িত্ব পালনের কথা অস্বীকার করলে তাঁর কর্মকাণ্ড স্ববিরোধী বলেই প্রমাণিত হবে। মওলানা জামেউল আখতার চৌধুরী যদি সত্যিসত্যি সম্পাদনায় জড়িত না থাকেন তাহলে তাঁর নাম কেন বইয়ে সম্পাদক হিসেবে শোভা পাচ্ছে? তিনি এর বিরুদ্ধে কী কী আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছেন? কোথায় কোন্ কোর্টে প্রকাশকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন? ফেইসবুকে মন্তব্য করলেই দায়িত্ব খালাস হবে বলে মনে করেন কি?

শেষ কথা

আসলে আমি বইটির অনুবাদক মাত্র। চূড়ান্ত রূপদান করেন সাঞ্জেরী পাবলিকেশনের সুযোগ্য আলেম-উলামার সম্পাদনা পর্ষদ। কিন্তু শিয়াচক্র মূল বিদেশি লেখক ও সম্পাদকমণ্ডলীকে দোষারোপ না করে আমাকেই অর্থাৎ বঙ্গানুবাদককেই ফেইসবুকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে চলেছে। এর কারণ সহজে অনুমেয়। আমি মহাভ্রান্ত শিয়া মতবাদের বিরুদ্ধে কলম ধরেছি। এটাই প্রকৃত ঘটনা। বিশেষ করে আমি যখন শিয়া মতবাদের খণ্ডনে কোনো আন্তর্জাতিক আলেমের লেখা বই অনলাইনে অনুবাদ আরম্ভ করি, তৎক্ষণাৎ তারা এ কাজে সক্রিয় হয়ে ওঠে।
May be an image of text



মঙ্গলবার, ৪ জুলাই, ২০২৩

হায় রে মুসলমান, এজেন্ডার তলে গেছে রসাতলে!

 

-এডমিন

এবার আরেকটি ডেলিভারী ইরানপন্থী জনৈক মৌ-লোভীর (স্ক্রীনশট দেখুন)। তিনি হযরত আলী (কার্রামাল্লাহু ওয়াজহাহু)-এর মওলা-বিষয়ক বর্ণনাসমূহের সূত্রগুলোকে প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মীলাদুন্নবী (দ.) ১২ তারিখ হওয়ার বর্ণনার চেয়েও বিশ্বস্ত বলে মনে করেন। আরে, ঝর্নার জলপ্রবাহের উৎস আগে, না শাখা-প্রশাখা আগে? এজেন্ডার তলে গেছে সব রসাতলে!

অতএব আসুন, আমার অনূদিত ‘মীলাদুন্নবী (দ.)-এর প্রামাণ্য দলিল’ শীর্ষক বইটি হতে ইমামবৃন্দের বিশুদ্ধ সূত্র বর্ণনা করা যাক [৬০-৬৩ পৃষ্ঠা, সনজেরী পাবলিকেশন, ২০১৭]।

১২ই রবিউল আউয়াল: মীলাদুন্নবী (দ:)-এর সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তারিখ

কেউ কেউ দাবি করেন যে মীলাদুন্নবী (দ:)-এর প্রকৃত তারিখ জ্ঞাত নয়, আর তাই ১২ই রবিউল আউয়াল তারিখে ঈদে মীলাদুন্নবী (দ:) উদযাপনের কোনো অবকাশ-ই নাকি নেই।

বারো রবিউল আউয়াল তারিখ মীলাদ-দিবস হিসেবে কেবল প্রাথমিক যুগের বুযূর্গানে দ্বীনের কাছেই গৃহীত নয়, এটি সমগ্র ইসলামী বিশ্বের রাষ্ট্র ও সরকারগুলো কর্তৃক স্বীকৃত (মীলাদুন্নবীর) দিনও। এই দিনটি প্রায় ২ ডজন দেশে রাষ্ট্রীয় ছুটি হিসেবে পালিত হয়; ইরান ছাড়া অন্যান্য সকল রাষ্ট্র ১২ রবিউল আউয়াল শরীফকেই মীলাদুন্নবী (দ:) মানে। ইরান ১৭ তারিখে তা পালন করে, কেননা ওই তারিখ ইমাম জা’ফর সাদেক (রহ:)-এর জন্মদিনের সাথে মিলে যায়। [এডমিনের নোট: লক্ষণীয় যে, ইরান এই ১২ তারিখকে মানে না; তাই তাদের পক্ষের এজেন্ডাওয়ালাও মানে না!]

মীলাদুন্নবী (দ:)-এর সঠিক তারিখের ব্যাপারে প্রখ্যাত ইতিহাসবিদদের অভিমত
১. ইমাম ইবনে এসহাক (৮৫-১৫১ হিজরী): ১২ই রবিউল আউয়াল, ‘আম-উল-ফীল’ (হস্তীর বছর)। [ইবনে জওযী কৃত ’আল-ওয়াফা’, ৮৭ পৃষ্ঠা]

২. আল্লামা ইবনে হেশাম (২১৩ হিজরী): সোমবার, ১২ই রবিউল আউয়াল, হস্তীর বছর। [ইবনে হেশাম প্রণীত ‘আস্ সীরাতুন্ নববীয়্যা’, ১ম খণ্ড, ১৫৮ পৃষ্ঠা]

৩. ইমাম ইবনে জারীর তাবারী (২২৪-৩১০ হিজরী): সোমবার, ১২ই রবিউল আউয়াল, হস্তীর বছর। [তারিখুল উমাম ওয়াল মুলূক, ২য় খণ্ড, ১২৫ পৃষ্ঠা]

৪. আল্লামা আবুল হাসান আলী বিন মোহাম্মদ আল-মাওয়ার্দী (৩৭০-৪৮০ হিজরী): ‘আসহাবে ফীল’ ঘটনার ৫০ দিন ও বাবার ইন্তেকালের পরে সোমবার, ১২ই রবিউল আউয়াল তারিখ। [এ’লামুন্ নবুওয়া, ১৯২ পৃষ্ঠা]

৫. ইমাম হাফেয আবুল ফাতাহ আল-আন্দালুসী (৬৭১-৭৩৪ হিজরী): সোমবার, ১২ই রবিউল আউয়াল, হস্তীর বছর। [আইয়ুন আল-আসর, ১ম খণ্ড, ৩৩ পৃষ্ঠা]

৬. আল্লামা ইবনে খালদুন (৭৩২-৮০৮ হিজরী): ১২ই রবিউল আউয়াল, হস্তীর বছর; সম্রাট কাসরা নোশায়রওয়ান শাহের ৪০তম বছর। [ইবনে খালদুন কৃত ‘আত্ তারিখ’, ২য় খণ্ড, ৩৯৪ পৃষ্ঠা]

৭. মোহাম্মদ সাদিক ইবরাহীম আরজূন: বিভিন্ন ‘তুরাক’ (পরম্পরা)-এ সুপ্রতিষ্ঠিত যে মীলাদুন্নবী (দ:) সোমবার, ১২ই রবিউল আউয়াল, হস্তীর বছরে, কাসরা নোশায়ওয়ান শাহের শাসনামলে। [মোহাম্মদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম, ১ম খণ্ড, ১০২ পৃষ্ঠা]

৮. শায়খ আবদুল হক্ক মোহাদ্দীসে দেহেলভী (৯৫০-১০৫২ হিজরী): “ভাল করে জেনে রাখো, ’সিয়ার’ ও ’তারিখ’ বিশেষজ্ঞদের (মানে জীবনীকার ও ইতিহাসবিদদের) নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ মত প্রকাশ করেন যে মহানবী (দ:) হস্তীর বছরে ধরণীতে আবির্ভূত হন.....এও ভালভাবে জ্ঞাত যে মাসটি ছিল রবিউল আউয়াল এবং দিনটি ১২ তারিখ। বিভিন্ন আলেম-উলেমা এই তারিখ সম্পর্কে ঐকমত্য পোষণ করেন।” [মাদারিজুন্ নবুয়্যত, ২য় খণ্ড, ১৪ পৃষ্ঠা]

৯. নবাব মোহাম্মদ সাদেক হাসান ভূপালভী: মীলাদুন্নবী (দ:) মক্কায় ফজরের সময় ১২ই রবিউল আউয়াল তারিখ, হস্তীর বছরে হয়েছিল। অধিকাংশ উলেমা এই মত সমর্থন করেন। ইবনে জওযী উলেমাদের ঐকমত্যের বিষয়টি বর্ণনা করেছেন। [আশ্ শোমামাতুল আম্বারিয়া ফী মওলিদে খায়র আল-বারিয়া, ৭ম পৃষ্ঠা]

অতএব, আপনারা দেখতে পেয়েছেন যে হিজরী প্রথম/দ্বিতীয় শতকের ইতিহাসবিদ ও জ্ঞানী-পণ্ডিতবৃন্দ এবং এর পাশাপাশি পরবর্তী যুগের জ্ঞান বিশারদগণও ১২ই রবিউল আউয়ালকে মীলাদ-দিবস হিসেবে নিশ্চিত করেছেন। এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ‘সালাফী’ নেতা নবাব সাদেক হাসান ভূপালীও।

ইসলামী বিশ্বে এই দিনটি আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত

কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সমগ্র ইসলামী বিশ্বে মীলাদুন্নবী (দ:) দিনটি উদযাপিত হয়। লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, ইরান ব্যতিরেকে (ওখানে ১৭ তারিখ পালিত হয়) সবগুলো মুসলমান দেশেই ১২ তারিখে তা পালিত হয়।

এখানে ১৬টি ইসলামী দেশের তালিকা দেয়া হলো, যেখানে ১২ই রবিউল আউয়াল তারিখে সরকারি ছুটি থাকে (এর প্রকৃত তালিকা আরও বড়):
জর্দান;
আরব আমীরাত;
বাহরাইন;
জাযিরাতুল আরব;
সুদান;
ইরাক;
কুয়েত;
মরক্কো;
ইয়েমেন;
তিউনিশিয়া;
সিরিয়া;
ওমান;
লেবানন;
লিবিয়া;
মিসর;
মৌরিতানিয়া।

উপসংহার

মীলাদুন্নবী (দ:)-এর সর্বজনগ্রাহ্য দিন ১২ই রবিউল আউয়াল তারিখ, যে সম্পর্কে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী উলেমাবৃন্দ এবং ইতিহাসবিদগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন; আর ইসলামী দেশগুলোও সরকারিভাবে পালনীয় দিবস হিসেবে গ্রহণ করেছে।

এক্ষণে আমরা এমন এক আলেমের উদ্ধৃতি দেবো যাকে ‘সালাফী’রা তাফসীর ও তাওয়ারিখ বিষয়ে সেরা আলেম মনে করে। তিনি শুধু ১২ তারিখকে মূলধারার উলেমাদের অভিমত বলেই ক্ষান্ত হন নি, বরং এর স্বপক্ষে হাদীসও পেশ করেছেন:

ইবনে আবি শায়বা (রহ:) তাঁর ‘মোসান্নাফ’ গ্রন্থে আফফান থেকে, তিনি সাঈদ থেকে, তিনি জাবের (রা:) থেকে, তিনি হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (দ:) হস্তীর বছরে ১২ই রবিউল আউয়াল, সোমবার, ধরাধামে শুভাগমন করেন। [ইবনে কাসীর কৃত ‘সীরাতুন্ নবী’, ১ম খণ্ড, ১৯৯ পৃষ্ঠা]

অতঃপর ইবনে কাসীর বলেন, “সংখ্যাগরিষ্ঠ উলেমাদের মধ্যে এটি-ই সুপ্রসিদ্ধ মত।” [প্রাগুক্ত]

ইমাম কসতলানী (রহ:) বলেন: মহানবী (দ:) ১২ই রবিউল আউয়াল তারিখে ধরণীতে আবির্ভূত হন এবং মক্কাবাসী মুসলমানগণ তা পালন করেন; ওই একই দিন তাঁরা (তাঁর) বেলাদত-স্থান যেয়ারত করেন....এটি জ্ঞাত যে মহানবী (দ:)-এর মীলাদ-দিবস ১২ই রবিউল আউয়াল, দিনটি ছিল সোমবার। ইবনে এসহাক (রহ:) এবং অন্যান্যরাও এ কথা বর্ণনা করেছেন। [আল-মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া, ১ম খণ্ড, ৮৮ পৃষ্ঠা]




*সমাপ্ত*

রেফারেন্স লিঙ্ক:

সোমবার, ৩ জুলাই, ২০২৩

মু’মিন হলেই তো ঈদ! ঈমানদার না হলে ঈদ কীভাবে?


-এডমিন

ওরে বেয়াক্কেল মৌ-লোভী, ঈদে গাদীর শিয়া সম্প্রদায়ের ঈদ, সুন্নীদের ঈদ নয়! আর সুন্নী ইমাম-আইয়েম্মাবৃন্দ শরঈ দলিলভিত্তিক অসংখ্য কিতাব লিখে প্রমাণ করেছেন যে শিয়াচক্র বাতীল তথা পথভ্রষ্ট দল। অতএব, আমরা ঈমানী তাকিদে তাদের কোনো কিছুর সাথে সাযুজ্যপূর্ণ কোনো কাজের অনুসরণ করি না। এর মজবুত দলিল হচ্ছে আল্লাহর কালাম শরীফ, যা’তে তিনি ঘোষণা করেছেন:

«أَلَمْ يَأْنِ لِلَّذِيْنَ آمَنُوْا أَنْ تَخْشَعَ قُلُوْبُهُمْ لِذِكْرِ اللهِ وَمَا نَزَلَ مِنَ الْحَقِّ، وَلَا يَكُوْنُوْا كَالَّذِيْنَ أُوْتُوْا الْكِتَابَ مِنْ قَبْلُ فَطَالَ عَلَيْهِمُ الْأَمَدُ فَقَسَتْ قُلُوْبُهُمْ، وَكَثِيْرٌ مِّنْهُمْ فَاسِقُوْنَ».

অর্থ: ঈমানদারদের জন্য কি এখনো ওই সময় আসেনি যে, তাদের অন্তর ঝুঁকে পড়বে আল্লাহর স্মরণ ও ওই সত্যের জন্য, যা অবতীর্ণ হয়েছে? এবং তাদের মতো হয়ো না, যাদেরকে পূর্বে (আসমানী) কিতাব দেওয়া হয়েছে, অতঃপর তাদের ওপর সময়সীমা দীর্ঘায়িত হয়েছে। সুতরাং তাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেছে এবং তাদের মধ্যে অনেকে ফাসিক্ব। [নূরুল ইরফান, ৫৭/১৬]

প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:

إِذَا كَانَ لِأَحَدِكُمْ ثَوْبَانِ فَلْيُصَلِّ فِيْهِمَا، فَإِنْ لَمْ يَكُنْ إِلاَّ ثَوْبٌ وَاحِدٌ فَلْيَتَّـزِرْ بِهِ، وَلَا يَشْتَمِلْ اشْتِمَالَ الْيَهُوْدِ.

অর্থ: ‘‘কারোর দু’টি কাপড় থাকলে সে যেনো উভয়টি পরেই নামায পড়ে। আর যদি কারোর একটি মাত্র কাপড় থাকে তাহলে সে যেনো কাপড়টিকে নিম্ন-বসন হিসেবেই পরিধান করে। ইহুদিদের মতো সে যেনো কাপড়টিকে পুরো শরীরে পেঁচিয়ে না পরে।” [আবূ দাউদ ৬৩৫]

ওপরোক্ত দলিলগুলোর (কিয়াসের) ভিত্তিতেই সুন্নী মুসলমান আলেম-উলামা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, বাতীল শিয়াদের সাথে সাযুজ্যপূর্ণ ধর্মীয় কোনো কাজে শরীক হওয়া যাবে না। গাউসে পাক বড়পীর সাহেব কেবলা (রহমতুল্লাহি আলাইহি) তাঁর একটি কিতাবে শিয়াদের অনেক কাজকে ইহুদীদের সাথে সাযুজ্যপূর্ণ বলে প্রমাণ করেছেন।

এবার আসুন আক্বলী তথা বুদ্ধিবৃত্তিক জবাবে। ঈদে গাদীর নাকি ‘ঈদে মুসার্রত।’ খুশি-আনন্দ অন্তরে দেখা দিলেই নাকি ঈদ মানাতে হবে। এতে শরঈ দলিলের কোনো প্রয়োজনই নেই। তো বিয়ে করতে গেলে খুশি-আনন্দ ও সুখ দেখা দেয়, বাচ্চা হলেও সুখ, চাকরিতে প্রমোশান বা ব্যবসায় লাভ হলেও সুখ। প্রতিটা ক্ষণই তাহলে ঈদ মানানো দরকার, কী বলেন? জাহেল আর কাকে বলে!

শেষ কথা হলো, মু’মিন হলেই তো ঈদ! ঈমানদার না হলে ঈদ কীভাবে? আর মু’মিনের প্রতিটি কাজই শরঈ দলিলসমর্থিত। [জরুরি নোট: মওলিদ প্রথাটি শিয়া গোষ্ঠী প্রবর্তন করেনি; এর প্রমাণ স্বয়ং প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে এসেছে। তিনি প্রতি সোমবার রোযা রেখে তা পালন করতেন]

*সমাপ্ত*



শনিবার, ১ জুলাই, ২০২৩

*এবারের হজ্জ্বে ইরানীদের ‘দোয়া-এ-কুমাইল’ পাঠ ও অনলাইনে সক্রিয় সুইডেনপ্রবাসী এক শিয়া ড: সাহেবের লম্ফঝম্প*

 

-এডমিন



আবারো অনলাইনে নিত্যনতুন শিয়া ফিতনার উদ্ভব হয়েছে! অধিকাংশ সুন্নী সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশে এই তথাকথিত দোয়ার কোনো নাম-গন্ধ না থাকলেও ইরানে এটা বিরাজমান। এবারের হজ্জ্বে মহাভ্রান্ত সৌদি নজদী-ওহাবীরা তাদের চরম পথভ্রষ্ট ইরানী রাফেযী-শিয়া ভাইদের সাদর অভ্যর্থনা জানিয়েছে এবং তাদের নিজস্ব বাতীল রসম-রেওয়াজ পালনের অনুমতি দিয়েছে। এটাই স্বাভাবিক, কেননা হাদীসে এসেছে সমস্ত বাতীল একজোট। আশ্চর্য লাগে, কিছুদিন আগেও এই দুটি দেশ প্রক্সি যুদ্ধে লিপ্ত ছিলো। এখন আন্তর্জাতিক বা ভূ-রাজনৈতিক কৌশলস্বরূপ মার্কিন ডলারের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধভাবে দাঁড়াবার স্বার্থে ধর্মীয় আকীদাগত পার্থক্য ভুলে গিয়েছে তারা! আমরা যারা সুন্নী মুসলমান তারা কিন্তু আকীদাগত বিষয়ে ছাড় দেই না! রাজনৈতিক জোট হলেও নয়! ধর্মীয় মূল্যবোধ বজায় রেখেই সন্ধিচুক্তি!

মজার ব্যাপার হলো, অনলাইনে সক্রিয় সুইডেনপ্রবাসী এক শিয়া-রাফেযী ড: সাহেব হজ্জ্বে ইরানী শিয়া গোষ্ঠীর দোয়া পাঠ নিয়ে সরব হয়েছেন। তিনি বাতীল সৌদি আরবের প্রশংসাও করেছেন। অথচ কিছুদিন আগেও তিনি সৌদি ওহাবীদেরকে নাসেবী-খারেজী বলে গালি-গালাজ করতেন! আমরা আবারো বলছি, এই দোয়া ইরানী শিয়ারাই পাঠ করে থাকে, সুন্নীপ্রধান মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে এর কোনো চর্চাই হয় না। ওই চামচার এই গুণকীর্তন দেখে সহজে বোঝা যায় তিনি কোন্ ঘরানার পাবলিক; কোন্ ঘাটের তরণী! বলা বাহুল্য যে, বেশির ভাগ সুন্নী তরীকতী সিলসিলা এসেছে হয়রত আলী (ক.) হতে; তাঁর থেকে ইমাম হাসান (রা.) অথবা ইমাম হুসাইন (রা.); অতঃপর ইমাম যাইনুল আবেদীন (রহ.); তাঁর পরে ইমাম বাকের (রহ.); অতঃপর ইমাম জা’ফর সাদিক (রহ.); এরপর ইমাম মূসা কাযিম (রহ.); অতঃপর ইমাম আলী রেযা (রহ.) প্রমুখ আহলে বাইত। শেষোক্ত জনের পরে বিভিন্ন বুযূর্গানে দ্বীন (আহলে বাইত বা অ-আহলে বাইত) বিভিন্ন সিলসিলায় মানুষদেরকে তরীকতী দীক্ষা দেন। খাঁটি সুন্নী তরীকাহ-গুলোর এটাই হচ্ছে সিলসিলার গোড়া।

অতএব, ইরানী বিরিয়ানীর প্রভাবদুষ্ট এ অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হবার জন্যে আমি সুন্নী মুসলমান সমাজের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাই।

*সমাপ্ত*