ব্লগ সংরক্ষাণাগার

বুধবার, ১৩ মে, ২০১৫

খোদাতা’লার অস্তিত্ব

[Bengali translation of Elijah Daniels' article 'God's Existence' shared on Google+]

অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন

পার্থিব জগৎ তথা পদার্থের এই মহাবিশ্বের অস্তিত্ব অবশ্যই কারো (অর্থাৎ, স্রষ্টার) সদাসর্বদা অস্তিত্বশীলতার ওপর নির্ভরশীল। কেননা, পদার্থবিজ্ঞান যাঁরা ভালো বোঝেন, তাঁরা উপলব্ধি করেন যে এই বিশ্বজগৎ শক্তিশালী এক নিয়মের বন্ধনে আবদ্ধ এবং এর সূচনা নিশ্চয়ই যথাযথভাবে হয়েছিল। এর ডিজাইন বা নকশা কোনো নকশাবিদের অস্তিত্ব-ই প্রমাণ করে।

কতিপয় বিজ্ঞানী যে আমাদের এই মহাবিশ্বের নিয়মবদ্ধতার কারণে খোদাতা’লার অস্তিত্বে বিশ্বাসের কথা স্বীকার করেছেন, সে বিষয়টি আমার কাছে কৌতূহলোদ্দীপক মনে হয়েছে। আমাদের এই গ্রহকে এবং এতে প্রাণের অস্তিত্বকে যথাযথ ও যুৎসইভাবে টিকিয়ে রাখার মতো স্থির প্রাকৃতিক নিয়ম এবং ক্রমাগত ঘটনাবলী এতে বিদ্যমান।

উদাহরণস্বরূপ, চারটি মৌলিক প্রাকৃতিক শক্তির (যথা - ইলেকট্রোম্যাগনেটিজম, মধ্যাকর্ষণ, স্ট্রং নিউক্লিয়ার ফোর্স ও উইক নিউক্লিয়ার ফোর্স) যথাযথ বিন্যস্তকরণ মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুকেই প্রভাবিত করে রেখেছে। এগুলোকে এমন নিখুঁত ভারসাম্যে বিন্যস্ত করা হয়েছে যে এমন কি সামান্যতম পরিবর্তনেও এই মহাবিশ্ব প্রাণশূন্য হয়ে যেতে পারে।

অতএব, যদি এ বিষয়টি প্রমাণও করা যায় যে মহাবিশ্বে পদার্থ ও শক্তি নিজে নিজেই অস্তিত্বশীল হওয়াটা সম্ভব, তবুও মহাবিশ্বের নকশা এতোই জটিল যে তা দৈব ঘটনাক্রমে (random chance) মহাবিশ্বের সূচনার ধারণাকে সম্পূর্ণভাবে নাকচ করে দেয়। যাঁরা সত্যিকার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় নির্ভর করেন, তাঁরা তাঁদের সিদ্ধান্ত দৈবঘটনার ভিত্তিতে নেন না।

উদাহরণস্বরূপ, বিবেচনা করুন অসংখ্য রসায়নিক প্রতিক্রিয়া যা ডিএনএ’র গঠনে নিখুঁত পর্যায়ক্রমিক হতে হবে।

বিষয়টির সঠিক মূল্যায়নে নিবেদন এই যে, সম্ভাবনা তত্ত্বের কর্তৃত্বশীল ড: এমিল বোরেল বলেন যে ১ সংখ্যা+৫০টি শূন্যবিশিষ্ট সংখ্যার ১ভাগের চেয়েও যদি কোনো একটি বিষয়ের ঘটার সম্ভাবনা কম থাকে, তাহলে তা কখনোই ঘটবে না, তাকে সময় যতোই দেয়া হোক না কেন।

তাই আমেরিকার ইউটা স্টেট ইউনিভারসিটির ড: ফ্র্যাংক সলসবারী প্রাণের আবির্ভাবের জন্যে প্রয়োজনীয় স্বতঃস্ফূর্ত মৌলিক ডিএনএ অণু গঠনের সম্ভাবনা হিসেব করার সময় দেখতে পান এটি এতোই সামান্য (১ সংখ্যা+৪১৫টি শূন্যবিশিষ্ট সংখ্যার ১ভাগ!) যে তা গাণিতিকভাবে অসম্ভব বলে বিবেচিত।

আসলে প্রাকৃতিক বিবর্তনের সম্ভাবনা এতোই অবিশ্বাস্যভাবে ক্ষীণ যে এমন কি বিখ্যাত বিবর্তনবিজ্ঞানীরাও স্বীকার করেন এটি কার্যত অসম্ভব; কিন্তু তাঁরা তবুও তাতে বিশ্বাস করেন। কেননা, তার একমাত্র বিকল্প (স্রষ্টার সৃষ্টি)
ধারণাটি যে তাঁদের কাছে অপছন্দনীয়।

উদাহরণস্বরূপ, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী জীববিজ্ঞানী ড: জর্জ ওয়াল্ড স্বীকার করেন:

“জীবসত্তার/প্রাণির স্বতঃস্ফূর্ত (মানে আপনাআপনি) জন্মলাভের ধারণাটি যে অসম্ভব, তা স্বীকার করে নেয়ার বিশাল বিষয়টি-ই কাউকে স্রেফ ভাবিয়ে তুলবে। তবু আমাদের অস্তিত্ব স্বতঃস্ফূর্ত জন্মলাভের মাধম্যেই হয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি।”

বিবর্তনবিজ্ঞানীদের এই অসম্ভবে বিশ্বাসটি মূলতঃ এই কারণে যে তাঁরা বিকল্পটি (অর্থাৎ, খোদার অস্তিত্বে) বিশ্বাস করতে চান না।

[এই অনুবাদ বিজ্ঞানবিষয়ক হওয়ায় এতে ভুল হতে পারে। আমি এর জন্যে ক্ষমাপ্রার্থী। কেউ ’টার্ম’গুলোর সঠিক বাংলা জানলে আমাকে জানাবেন। আমি প্রয়োজনীয় সংশোধন করে নেবো। ধন্যবাদ।]  


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন