ব্লগ সংরক্ষাণাগার

বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪

*রাসূল (ﷺ) কখন থেকে রাসূল?*


-এডমিন
হায়, মুসলমান সমাজের এ কী দুরবস্থা! অনলাইনে প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যথাসাধ্য হেয় করার জন্যে কতিপয় আলেম-উলামার কী প্রাণান্তকর অপপ্রয়াস! শিরোনামের বিষয়টি এখন অনলাইনে ভাইরাল এ মর্মে যে, প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রকাশ্য হায়াতে জিন্দেগী ৪০ বছর হওয়ার আগে তিনি রাসূল বা নবী ছিলেন না। সুন্নী আলেম-উলামা শরঈ দলিল পেশ করেছেন যে তিনি তা সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই ছিলেন। আমি তাঁদের পেশকৃত দলিল নিয়ে এ আলোচনা করবো না, বরং আরেকটি দলিল এখানে পেশ করবো। অতএব, কথা না বাড়িয়ে দলিলে যাওয়া যাক।
*হাদীসের আরবী ইবারত*
حدثنا أبو سعيد عمرو بن محمد بن منصور العدل حدثنا أبو الحسن محمد بن إسحاق بن إبراهيم الحنظلي حدثنا أبو الحارث عبد الله بن مسلم الفهري حدثنا إسماعيل بن مسلمة أنبأ عبد الرحمن بن زيد بن أسلم عن أبيه عن جده عن عمر بن الخطاب رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لما اقترف آدم الخطيئة قال يا رب أسألك بحق محمد لما غفرت لي فقال الله يا آدم وكيف عرفت محمدا ولم أخلقه قال يا رب لأنك لما خلقتني بيدك ونفخت في من روحك رفعت رأسي فرأيت على قوائم العرش مكتوبا لا إله إلا الله محمد رسول الله فعلمت أنك لم تضف إلى اسمك إلا أحب الخلق إليك فقال الله صدقت يا آدم إنه لأحب الخلق إلي ادعني بحقه فقد غفرت لك ولولا محمد ما خلقتك .
هذا حديث صحيح الإسناد
সারমর্ম: হযরত উমর ইবনে খাত্তাব (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যখন আদম (আলাইহিস সালাম) গন্দম খাওয়ার কাজটি সংঘটন করেন, তখন তিনি আরয করেন: ‘হে আমার প্রভু! আমি মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)-এর হক্ব তথা অধিকারের দোহাই দিয়ে আপনার কাছে পানাহ্ বা ক্ষমা চাই।’ আল্লাহ এমতাবস্থায় বলেন: ‘ওহে আদম (আ:)! তুমি মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে কীভাবে জানলে, যাঁকে আমি এখনো সৃষ্টি করিনি?’ পয়গম্বর আদম (আ:) উত্তর দেন: ‘হে আমার প্রভু! আপনি যখন আমায় সৃষ্টি করেন এবং আমার মাঝে রূহ ফুঁকে দেন, তখন আমি আমার মাথা তুলে দেখতে পাই (উচ্চ) আরশের সীমায় লেখা আছে - লা’ ইলা’হা ইল্লা’ল্লা’হু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লা’হ। আমি বুঝতে পারি, আপনি আপনার সবচেয়ে প্রিয় কারো নাম (মোবারক)-ই আপনার পবিত্র নামের পাশে স্থাপন করতে পারেন।’ অতঃপর আল্লাহতা’লা বলেন, ‘ওহে আদম (আ:)! আমি তোমায় ক্ষমা করলাম; মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) না হলে আমি তোমাকে সৃষ্টি করতাম না’।”
وأقر صحته السبكي في شفاء السقام ص 120 ، والسمهودي في وفاء الوفاء ص 419 ، والقسطلاني في المواهب اللدنية ، والزرقاني في شرحه 1 ص 44 ، والعزامي في فرقان القرآن ص 117 .
এই হাদীসটি আল-হা’কিম বর্ণনা করেন এবং তিনি এটাকে সহীহ বলেছেন [আল-মুসতাদরাক, ২:৬১৫]। এছাড়া একে সহীহ বলেছেন ইমাম হাফেয আল-সৈয়ূতী (রহ:) নিজ ‘খাসা’ইস’ পুস্তকে এবং জাল হাদীসের বর্ণনা পরিহারকারী ইমাম বায়হাক্বী (রহ:) আপন ‘দালা’য়েল আল-নুবুওয়্যা’ গ্রন্থের ভূমিকায়। এ হাদীসকে সহীহ ঘোষণা করেছেন ইমাম ক্বসতলা’নী (রহ:) তাঁর ‘আল-মাওয়া’হিবুল লাদুনিয়া’ বইয়ে এবং যুরক্বা’নী মালেকী নিজের ‘শরহে মাওয়া’হিব’ পুস্তকে। এছাড়া একে সহীহ বলেছেন ইমাম তক্বীউদ্দীন সুবকী তাঁর ‘শেফাউস সেক্বা’ম বইয়ে। [শাইখ মুহাম্মদ আলূভী মালিকী হাসানী (রহ.) কৃত ‘সংশোধনীয় ভ্রান্ত ধারণাসমূহ]
ইবনে তাইমিয়া, আলবানী, মাদখালী গং এই হাদীসটিকে জাল/দুর্বল প্রমাণ করতে চাইলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাইখ হিশাম কাব্বানী নক্বশবন্দী সাহেব তাদেরকে একটি নাতিদীর্ঘ লেখায় রদ করেছেন, যা পরে কোনো এক সময়ে অনুবাদ করে দেবো, ইনশা’আল্লাহ। লিঙ্ক: https://docs.google.com/document/d/1J3jwbJZ7MYjQSBu4sNio4d8UfbyVJoYs6SNv_NeLqG0/edit?usp=sharing
*লক্ষ্য করুন*
আরশের সীমায় ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ (ﷺ) মর্মে কলেমা-বাক্যটি লেখা ছিলো। এতে বোঝা যায়, প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই রাসূল ছিলেন। আল্লাহর কী মহিমা! শরঈ দলিলেই বাতীলদের রদ!
*সমাপ্ত*

See insights and ads
All reactions:
Naimul Ahsan, Musaheb Uddin Baktiar and 77 others

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন