ব্লগ সংরক্ষাণাগার

বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ইমাম মাহদী (আ.) দাবিকারী ব্যক্তি ও কবর থেকে তুলে মরদেহ পোড়ানো সংক্রান্ত শরঈ বিধান


মওলানা মুহাম্মদ রুবাইয়াত বিন মূসা

প্রভাষক,

সাঁইদাঁইর গাউছিয়া তৈয়্যবিয়া দিলোয়ারা বেগম সুন্নিয়া ফাযিল মাদরাসা,

চট্টগ্রাম। 


(১) ইমাম মাহদী দাবী করা ব্যক্তির বিষয়ে বিধান

(২) কবর থেকে লাশ তুলে নিয়ে পুড়ে ফেলার বিধান

(১) নিজেকে ইমাম মাহদী দাবী করা-
যদি কেউ সত্যিই নিজেকে ইমাম মাহদী বলে দাবি করে, তবে এটি বিদআত ও গোমরাহি। কিন্তু শুধু দাবীর কারণে কাউকে কাফির বলা যায় না, যতক্ষণ না সে স্পষ্ট কুফরি বা শরীয়তের অস্বীকার করে।

ফিকহী নীতি (হানাফী)-
الإمام أبو حنيفة رحمه الله يقول: "لا نكفّر أحداً من أهل القبلة بذنب ما لم يستحله" (الفقه الأكبر، ص: 317)
- ইমাম আবু হানীফা (রহ.) বলেন, “আমরা আহলে কিবলার (কালিমা পাঠকারীদের) কাউকে কোন গুনাহের কারণে কাফির বলি না, যতক্ষণ না সে সেটিকে হালাল মনে করে। [ফিকহুল আকবর]

(২) মৃত্যুর পর কবর থেকে তুলে লাশ পুড়িয়ে ফেলার বিধান-
লাশ পুড়িয়ে ফেলা ইসলাম বিরোধী, এমনকি কাফিরের লাশও পুড়িয়ে ফেলা জায়েয নয়। কুরআন মাজিদে আছে: ثُمَّ أَمَاتَهُ فَأَقْبَرَهُ ‎
- অতঃপর তিনি (আল্লাহ) তাকে মৃত্যু দেন, তারপর তাকে কবরস্থ করেন। [আল কুরআন : আল আবাসা, ৮০/২১]

কবর দেওয়া আল্লাহর নির্দেশ। তাই এর বিরোধিতা করা শরীয়ত বিরোধী।

হাদীস

عَنْ جَابِرٍ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «إِذَا مَاتَ أَحَدُكُمْ فَلَا تَحْبِسُوهُ، وَأَسْرِعُوا بِهِ إِلَى قَبْرِهِ» (رواه البخاري 1315، مسلم 944)
-রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের কারো মৃত্যু হলে তাকে (দাফনে) বিলম্ব করো না, দ্রুত তাকে তার কবরে পৌঁছে দাও। (বুখারী, মুসলিম)

হানাফী ফিকহ

ফাতাওয়া হিন্দিয়া (আলমগীরি) গ্রন্থে বলা হয়েছে: ولا يجوز إحراق الميت، مسلماً كان أو كافراً، بل يدفن في الأرض كما أمر الله تعالى.” (الفتاوى الهندية) 1/162)
- মৃত ব্যক্তিকে পুড়িয়ে ফেলা জায়েয নয়, সে মুসলিম হোক বা কাফির; বরং তাকে আল্লাহ যেমন কবরের নির্দেশ দিয়েছেন, তেমনিভাবে মাটির নিচে দাফন করা হবে।

*সমাপ্ত*